ভোলা জেলার তজুমদ্দিন থানার গোলকপুর গ্রামে ঘটে গেছে এক হৃদয়বিদারক ও নিন্দনীয় ঘটনা। অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমস সুপার এন্টেন, অভিনাশ চন্দ্র হাওলাদার মৃত্যুবরণ করলে তার কন্যা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তিনি ২০২২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তজুমদ্দিনে ছুটে গেলে স্বজনরা তাকে শেষবারের মতো বাবার মুখ দেখতে না দিয়ে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিকভাবে পছন্দমতো বিয়ে করায় বাবার কাছে অপ্রিয় হয়ে ওঠেন কন্যা। এরপর বাবার মৃত্যুতে তাকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। কেবল তাই নয়, মৃত বাবার সম্পত্তি ও পরিবারে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টার প্রতিক্রিয়ায়, স্বজনরা শুরু করে অমানবিক নির্যাতন।
সম্প্রতি ২০২৫ সালের ১৭ মে, ওই নারী তার মাসির মাধ্যমে জানতে পারেন যে তার মা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঘরে তালাবদ্ধ হয়ে আছেন এবং একমাত্র সঙ্গী হচ্ছেন তার প্রতিবন্ধী ছেলে। খবর পেয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় একটি মেডিকেল টিম ওই বাড়িতে গেলে বাধা প্রদান করা হয় এবং চিকিৎসকদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। তবুও চিকিৎসক রোগীকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান এবং তার জখমের অবস্থা যাচাই করে সংবাদ সম্মেলন করেন, যার ভিডিও প্রমাণ কন্যার কাছে রয়েছে।
এমনকি মা কোথায় আছেন তা জানতে কন্যা নানা চেষ্টা করে জানতে পারেন যে তাকে ঢাকায় বারডেম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। রমনা থানার সহায়তায় তিনি অবশেষে মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সক্ষম হন। অভিযোগ রয়েছে, মা এখনও জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন এবং তার ওপর চলছে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। হাত ও শরীরে সিগারেটের আগুনে পোড়ার দাগ এবং পায়ে পচন ধরা দেখা গেছে, অথচ চিকিৎসা করা হচ্ছে না।
তিনি দাবি করেছেন, তার মা যেন তার হেফাজতে চিকিৎসা নিতে পারেন এবং আর কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার না হন। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সাহায্য কামনা করেছেন।