
শতবর্ষী নোয়াখালী জেলা সমিতির প্রথম নির্বাচন আগামীকাল (১৩ সেপ্টেম্বর) শনিবার মতিঝিল টিএন্ডটি কলেজে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।সকাল ১০ টায় শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলবে টানা বিকেল ৪ টা পর্যন্ত। এমনটাই জানিয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
১২০ বছর পরে প্রথম বারের মতো নির্বাচনে দুটি প্যানেলে ৬২ জন ও ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৬৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার ১৮১৫ জন।
বিশিষ্ট শিল্পপতি ব্যবসায়ী ফখরুল সাহেবের নেতৃত্বাধীন আজীবন সদস্য সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীরা এবারই প্রথমবারের মতো নোয়াখালী জেলা সমিতির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
অন্যদিকে এম এ খান বেলাল সাহেবের নেতৃত্বাধীন বৈষম্য বিরোধী ঐক্য পরিষদের বেশির ভাগ প্রার্থীরা আগে থেকে সমিতির কমিটিতে ছিলেন। বেলাল সাহেব বিগত দুই দশক সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন এবং ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আহ্বায়ক হন।
নোয়াখালী জেলা সমিতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায় নতুন নেতৃত্ব চায় বেশির ভাগ ভোটার।
ভোটার জরিপ ও দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের গতকাল ১১ সেপ্টেম্বরের শোডাউনের মতবিনিময় সভায় ভোটার উপস্থিতির আলোকে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন এ নির্বাচনে ফখরুল – সালাহউদ্দিন নেতৃত্বাধীন পরিষদ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন।শতবর্ষী নোয়াখালী জেলা সমিতির এবারের নির্বাচনে যারাই ভোট দিবেন এবং নির্বাচিত হবেন তারা এই ঐতিহ্যবাহী নোয়াখালী জেলার ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবেন।
নোয়াখালীর ইতিহাসে এ ভোট ঐতিহাসিক বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।১২০ বছরের ইতিহাসে ঐতিহ্যের প্রাচীনতম এ জেলা সমিতির এ পর্যন্ত কোন নির্বাচন হয়নি। নির্বাচিত কোন প্রতিনিধি দিয়ে চলেনি এই সমিতি। সমিতিটা ছিলো কিছু ব্যক্তি ও সিন্ডিকেটের পকেটে।
২০১৭ সাল থেকে বিশিষ্ট সংগঠক মরহুম লুৎফর রহমান ফটিকের নেতৃত্বে নির্বাচিত প্রতিনিধি দিয়ে সমিতি চালানো দাবিতে আজীবন সদস্য সমন্বয় পরিষদ গঠন করে ভোটের দাবিকে জোরদার করা হয়।
সেই সময়ে জনাব আহাম্মদ উল্যাকে আহ্বায়ক ও জাকির হোসেন পারভেজকে সদস্য সচিব করে ৫৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।এই কমিটির উল্লেখ যোগ্য নেতৃত্ব ছিলেন সম্মানিত সদস্য ছিলেন মোঃ সালা উদ্দিন (সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী), যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক (সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী), আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন মঞ্জুর কাদের চৌধুরী (সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী)। মোট ২/৩ জন বাদে ফখরুল ইসলাম-সালাহ উদ্দিন পরিষদের সবাই ভোটের আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য।৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সমিতি সিন্ডিকেট মুক্ত হলে, এম এ খান বেলাল সাহেবকে আহ্বায়ক করে যে কমিটি গঠিত হয় সেই তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি ১ বছর ২ মাস মাস পর নির্বাচনের পথে বাধা হয় ফখরুল ইসলাম-সালাহ পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায়।৫ আগস্টের আগের কমিটি আজীবন সদস্যদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ছিলো।আজীবন সদস্য সমন্বয় কমিটির আন্দোলনের ফসল আজকের নির্বাচন।
সর্বশেষ আহবায়ক কমিটি গঠনতন্ত্র সংশোধন পূর্বক আজীবন সদস্যদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে।
এইবারের নির্বাচনের দুই প্যানেলের বেশিরভাগ প্রার্থীই যোগ্য প্রার্থী। ভোটের লড়াই নতুন আর পুরাতনে।
তবে ফখরুল-সালাহউদ্দিন প্যানেলের অন্যান্য পদের সকল প্রার্থীরাই অত্যন্ত যোগ্যতা সম্পন্ন। তাই আজীবন সদস্য তথা ভোটাররা মনে করেন এ প্যানেলের বিকল্প কোন শক্তিশালী প্যানেল দাঁড় করানো হয়নি। এতে আগামীকালের নির্বাচনে ফখরুল – সালাহউদ্দিন পরিষদ এর জয়ের সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন আজীবন সদস্য ভোটাররা।কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বল্লে তারা জানান, নোয়াখালী জেলা সমিতিকে একটি কাঙ্খিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে ফখরুল-সালাউদ্দিন পরিষদের বিকল্প নাই।