1. news@dailyupokulbarta.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
‌একজন গর্বিত পিতা আব্দুল মান্নান । | দৈনিক উপকূল বার্তা
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
চট্টগ্রাম কর্ণফুলীতে নকল সাবান তৈরির কারখানায় র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত   নোয়াখালীতে মন্জু হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন মুকসুদপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত  নোয়াখালীতে অটোরিকশা-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে ওষুধ কর্মকর্তা নিহত হাতিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি-গণঅধিকারসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান হান্নান মাসউদের হাদিকে গুপ্ত বাহিনী নিষিদ্ধ বাহিনী হামলা করেছে- নোয়াখালীতে শিবির সেক্রেটারি  নোয়াখালীতে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণঃ নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত  নোয়াখালীতে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল বেগমগঞ্জে রেলওয়ের অবৈধ স্থাপনা বহুদিন পর উচ্ছেদ, দাদির ওপর অভিমানে কীটনাশক খেয়ে কিশোরীর মৃত্যু

‌একজন গর্বিত পিতা আব্দুল মান্নান ।

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৩৪৭ বার

প্রতিটি মেয়ের কাছে শ্রেষ্ঠ পুরুষ মনে হয় তার বাবা । আমি এই দিক দিয়ে অনেক ভাগ্যবান যে একজন উদার মুক্তমনা জ্ঞানী পিতার ঘরে বড় কন্যা হিসাবে আমার জন্ম স্বাধীনতার অব্যবহিত কাল পূর্বে । আমার কবি পিতা শিশু বয়স থেকেই দেখেছি উনার কবিতা লেখা ও সাহিত্য জগতে অবাধ বিচরন । আমাদের মতিঝিল এজিবী কলোনীর সেই বাসাটায় ছিলো অসংখ্য বই আর বই । হয়ত আমরা খুব স্বচ্ছল পরিবার ছিলাম না কিন্তু বইকেনায় আমরা স্বচ্ছল ছিলাম । কত নিউমার্কেট যেতাম আব্বার সাথে বই কিনতে ।আব্বা আমাদের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরায় নিয়ে বেড়াতেন । দেশ বিদেশ নিয়ে কত গল্প করতেন ॥ এমন করে গল্প করতেন আমার মনে হতো উনি সেখানে গেছেন । উনার পৃথিবীর মানচিত্র সন্মন্ধে এতো জ্ঞান ছিলো ,উনি আমার আমেরিকা ভ্রমনের সময় বলে দিতেন আমি আমেরিকার কোনদিকে অবস্হান করছি পূর্বে না পশ্চিমে । ছোট বেলা থেকেই জ্ঞান ভান্ডারে সমৃদ্ধ ছিলাম পিতার কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে গল্প শুনে শুনে । আমি ছোট থেকেই পড়ালেখায় খুব মনোযোগী ছিলাম ॥ পড়তে খুব পছন্দ করতাম এই গুন পেয়েছিলাম প্রিয় পিতার কাছ থেকে ॥ একদম যখন ছোট আমি ছুটির দিনগুলোতে আব্বার কাছে পড়তে বসতাম এর পর নিজে নিজেই পড়া শুরু করলাম, আমার কোনো গৃহশিক্ষক ছিলো না আব্বাই ছিলেন আমার শিক্ষক ॥ অংক বা কোনো বিষয়ে আটকে গেলে অপেক্ষা করতাম আব্বার ফিরে আসবার । আব্বাকে মনে হতো জীবন্ত বিশ্বকোষ যার জ্ঞান সর্ব বিষয়ে সাহিত্য থেকে বিজ্ঞান ।

আব্বা তখন তার কয়েকজন বন্ধু মিলে মতিঝিল সরকারী প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়ে একটা নৈশ কলেজ স্হাপন করলেন এবং উনি ছিলেন তার খন্ডকালীন অধ্যক্ষ । তাই সরকারী চাকুরীর পর কলেজ থেকে আব্বার ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হতো ॥ আমি অপেক্ষায় থাকতাম আব্বার ফিরে আসবার একটু জ্বর হলেও সব আব্দার আব্বার কাছে যদিও আমার আম্মা আমাদের সব দিকে সংসারে খেয়াল রাখতেন কিন্তু বাবা ছিলেন স্বপ্ন পুরুষ । আব্বা এসে মনি বলে ডাকবেন মাথায় হাত রাখবেন জ্বরের ভিতর তার জন্য অপেক্ষা করতাম ॥ আমি একটু বড় হবার পর আমার বই পড়বার প্রতি আগ্রহ দেখে আব্বা বাসায় কিশোর পত্রিকা রাখা শুরু করলেন ,তার পাশাপাশি রাশিয়ান পত্রিকা অসংখ্য বই আমাদের বাসায় আসতো॥ জুলভার্নের কল্পবিজ্ঞান মনের মাঝে এক স্বপ্নজগত সৃষ্টি করেছিলো সেই কিশোর বয়সেই কিন্তু নিজের লেখায় সেই কল্পনাকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি নাই কখনও । কবিতার থেকে গল্প উপন্যাসের দিকে আসক্ত ছিলাম বেশী । মনে আছে ছেলেবেলায় একবার আব্বাকে হাত দেখিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম ,আব্বা বড় হয়ে আমি কি হবো ? আব্বা বলেছিলেন তুমি কামাল পাশার মত বড় বীর হবে । খুব খুশী মনে তখন এই তুর্কী বীরের জীবন সম্মন্ধে পড়া শুরু করেছিলাম তাকে জানতে ॥ নব্য তুর্কীদের জীবনে যে পরিবর্তন ও আধুনিক জীবনবোধ তিনি দিয়েছিলেন নিজের জীবনে সমাজে সেই ভাবনায় পথ চলার চেষ্টা করেছি সবসময়। জীবন সংগ্রামে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি অবিচল আস্হায় পথ চলেছি ।

খুব অল্পবয়সে সংসার জীবনে প্রবেশ করবার কারনে জীবনে নিজে কি হতে চাই তা ভাবনার সময় ছিলো না ,বুঝতাম প্রিয় পিতা কষ্ট পেয়েছিলেন তার মেধাবী মেয়েটিকে শুধু গৃহবধু হিসাবে দেখতে পেয়ে তবুও জীবনে এইটুকুই শান্তি ,আব্বা দেখে গেছেন আমি কবিতা লিখছি । ২০২০ সাল গ্রুপে বন্ধুদের উৎসাহে লেখা শুরু করেছি , গ্রুপে ও নিজের টাইম লাইনে পোস্ট করি তখন করোনা মহামারী চলছে ,নিস্তব্ধ পৃথিবী ॥ আব্বার বয়স ও সুস্হতার কথা চিন্তা করে উনাকে আলাদা রাখি বেশী যাই না তবে প্রতিদিন ফোনে কথা হয় ,আমার কবিতার খোঁজ উনি রাখেন এবং উনি খুব খুশী আমি কবিতা লিখছি । শেষ সাক্ষাতে আমার কবিতা লেখায় উনার দুচোখে যে আলো আমি দেখেছিলাম সেই আলোর রেশই আমার অনবরত কবিতা লেখা । উনি বলেছিলেন কবির মৃত্যু নাই সে বেঁচে থাকে মানুষের মনে তার কবিতায় । সত্যি তাই উনি বেঁচে আছেন উনার সাহিত্যে , সন্তানদের মনে অপার ভালোবাসায় ।

আমি কৃতজ্ঞ মহান আল্লাহপাকের কাছে আগামী ২০২৪ইং মহান একুশে বাংলা একাডেমি বইমেলায় পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডের একজন নিয়মিত লেখক হিসাবে আমার তৃতীয় কাব্যগ্রনহ -নৈঃশব্দ্যের শব্দ,এর সাথে আমার পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনি -আমার জীবনস্মৃতি ,যা উনি লিখে গেছেন আমাদের স্বাধীনতা মহান মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ ইং পর্যন্ত প্রকাশিত হচ্ছে । যদিও কষ্ট মনে পিতা দেখে গেলেন না আমার এই প্রাপ্তি একজন লেখক হিসাবে তবুও কৃতজ্ঞ মহান আল্লাহ পাকের কাছে এমন একজন অসামান্য গুণী পিতার কন্যা হতে পেরে । যে কবিতার শব্দ ছন্দ জীবনবোধ উনি দিয়ে গেছেন আমার রক্তে ,সেই পিতা কবি বেঁচে থাকবেন আমৃত্যু আমার লেখনির শব্দমালায় নিশ্বাসে বিশ্বাসে ,সুখে ও বেদনার কাব্যস্রোতে

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

আর্কাইভ

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© 2023, All rights reserved.
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট